ইন্দ্রঃ
দেবতা ও অসুরদের যুদ্ধে দেবতারা পরাজিত হলে, দেবরাজ ইন্দ্র জয়লাভের পথ খুঁজতে দেবগুরু বৃহস্পতির কাছে যখন যাচ্ছিলেন, সেইসময় ইন্দ্রের পত্নী ইন্দ্রানী দেবরাজকে বললেন, তিনি জানেন কি উপায়ে অসুরদের পরাজিত করা য়ায় । আর সেই উপায় হিসাবে পরদিন শ্রাবণ মাসের
পূর্ণিমাতে ইন্দ্রানী স্বামীর হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন 'রক্ষাকবচ '। এবার ইন্দ্র অসুরদের পরাজিত করতে সমর্থ হলেন । এই রক্ষাকবচটি ছিল একটি 'রাখী '। পৌরানিক কাহিনীতে স্ত্রী স্বামীর হাতে রাখী বেঁধে দিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে রীতির পরিবর্তন হয় এবং সাধারণত বোনেরা ভাইদের হাতে রাখী বেঁধে দেয়।
মহাভারতঃ
বালি এবং লক্ষী দেবিঃ
২) বাংলায় রাখী বন্ধন প্রবর্তণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।আমাদের দেশ তখন বৃটিশ দের অধীনে শাসিত।১৯০৫ সালে ২০ জুলাই ভাইসরয় লর্ড কার্জন এর সিদ্ধান্তে ঘোষিত হয় যে বাংলা কে দুই
ভাগে ভাগ করা হবে।এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলার শক্তিকে খর্ব করা।ঠিক করা হয়েছিল যে হিন্দু ও
মুসলিমের প্রাধান্য অনুসারে সমগ্র বাংলাকে পূর্ব আরপশ্চিম বাংলায় বিভক্ত করা হবে।১৯০৫ সালে ১৬ অক্টোবরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হয়।সমগ্র বাংলা এই বিভাগের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে।
শুরু হয় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন।এই বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন এর অন্যতম ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।তিনি বাংলার সব মানুষ কে আহবান জানান এর প্রতিবাদে সামিল হবার জন্য।এই দিনটিতে তিনি রাখী বন্ধন উৎসব পালন করেন বাঙ্গালীদের নিয়ে।রবীন্দ্রনা থ প্রবর্তিত রাখী হিন্দু সমাজে প্রচলিত অনুষ্ঠানের থেকে তাই কিছুটা ভিন্ন।
রাখী বন্ধনের পদ্ধতিঃ
কাঠের পিঁড়ি তে ভাই কে বসতে দেয়া হয়। পিঁড়ির চারপাশে আলপনা আঁকা হয়। এবার ভাই বোন দুইজনেই একে অপরের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করে। বোন ভাইএর কপালে তিলক দিয়ে দেয়। এবার ডান হাতের কব্জিতে রাখী বাঁধে। এরপর ঘি এর প্রদীপ দিয়ে ভাইয়ের সামনে আরতি করা হয়। ভাই, বোন কে উপহার দেয় এবং বোন তা শ্রদ্ধার সাথে গ্রহন করে। পরিশেষে বলা যা্য় রাখী বন্ধন উৎসব
একটি পারিবারিক মিলন বন্ধনের উপযুক্ত উদাহরণ । বর্তমানে আমাদের জীবনে রাখী বন্ধন উৎসব শুধুমাত্র বোন-ভাই এর মধ্যেই সীমিত নেই বন্ধু-বান্ধব এবং রাজনৈতিক জগতেও নিজেদের মধ্যে ভালোবাসার এবং মিলনের ঐক্য গড়ে তুলছে।
পূর্ণিমাতে ইন্দ্রানী স্বামীর হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন 'রক্ষাকবচ '। এবার ইন্দ্র অসুরদের পরাজিত করতে সমর্থ হলেন । এই রক্ষাকবচটি ছিল একটি 'রাখী '। পৌরানিক কাহিনীতে স্ত্রী স্বামীর হাতে রাখী বেঁধে দিয়েছিলেন । পরবর্তীকালে রীতির পরিবর্তন হয় এবং সাধারণত বোনেরা ভাইদের হাতে রাখী বেঁধে দেয়।
মহাভারতঃ
শ্রীকৃষ্ণ একবার রথের চাকার আঘাতে আহত হয়েছিলেন,তখন দ্রৌপদী তাঁর নিজের
শাড়ী ছিঁড়ে কৃষ্ণের রক্তাক্ত হাতে বেঁধে দেন। দৌপদীর এই সেবা শ্রীকৃষ্ণ কে মোহিত করে এবং তিনি দ্রৌপদীর প্রতি এক নিবিড় স্নেহের বন্ধন অনুভব করেন।এই ঘটনার পর থেকে শ্রীকৃষ্ণ ও দ্রৌপদীর মধ্যে এক পরম শ্রদ্ধা ও স্নেহ এর বন্ধন সৃষ্টি হয়।এর পর বহু বছর কেটে যায়। রাজা ধৃতরাষ্ট্র এর সভায় দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণের গল্প আমাদের সবার জানা। সেখানে অসম্মানিত, অপমানিত দ্রৌপদী কে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন কৃষ্ণ,তিনি তাঁর বসন কে বর্ধিত করে দ্রৌপদী কে অপমানের হাত থেকে রক্ষা করেন। অনেকের বিশ্বাস যে মহাভারতের দ্রৌপদী আর কৃষ্ণের এই স্নেহের বন্ধনই হিন্দু সমাজে রাখী বন্ধন এর মূল সূত্র।
শাড়ী ছিঁড়ে কৃষ্ণের রক্তাক্ত হাতে বেঁধে দেন। দৌপদীর এই সেবা শ্রীকৃষ্ণ কে মোহিত করে এবং তিনি দ্রৌপদীর প্রতি এক নিবিড় স্নেহের বন্ধন অনুভব করেন।এই ঘটনার পর থেকে শ্রীকৃষ্ণ ও দ্রৌপদীর মধ্যে এক পরম শ্রদ্ধা ও স্নেহ এর বন্ধন সৃষ্টি হয়।এর পর বহু বছর কেটে যায়। রাজা ধৃতরাষ্ট্র এর সভায় দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণের গল্প আমাদের সবার জানা। সেখানে অসম্মানিত, অপমানিত দ্রৌপদী কে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন কৃষ্ণ,তিনি তাঁর বসন কে বর্ধিত করে দ্রৌপদী কে অপমানের হাত থেকে রক্ষা করেন। অনেকের বিশ্বাস যে মহাভারতের দ্রৌপদী আর কৃষ্ণের এই স্নেহের বন্ধনই হিন্দু সমাজে রাখী বন্ধন এর মূল সূত্র।
বালি এবং লক্ষী দেবিঃ
বালি বিষ্ণু ভক্ত ছিলেন। বিষ্ণু বালির সাম্রাজ্য রক্ষা করার জন্য বৈকুণ্ঠ ত্যাগ করেন। মা লক্ষী তখন এক মহিলার বেশে বালির কাছে আসেন এবং বালি কে রাখী পরান। রাখী বাঁধার পর লক্ষী দেবি তাঁর নিজের পরিচয় দেন। তখন বালি বিষ্ণু কে অনুরোধ করেন মা লক্ষী কে সঙ্গ দেয়ার জন্য। বিষ্ণু পুনরায় বৈকুণ্ঠে ফিরে আসেন।
যম এবং যমুনাঃ
যমুনা তার ভাই যম কে রাখী বাঁধেন এবং অমরত্ত প্রদান করেন। তখন যম ঘোষনা করেন ,যে ভাই বোনের দ্বারা রাখী বাঁধবে এবং বোনকে রক্ষা করার দায়িত্ত্ব নেবে সে অমরত্ব লাভ করবে।
রাখী বন্ধনের ঐতিহাসিক গুরুত্ত্ব:
১) মুসলমানী সাম্রাজ্য গ্রাসীত ভারতবর্ষে রাজপুত আর সুলতান দের যুদ্ধ চলাকালীন চিতরের
বিধবা রাণী কর্ণবতী বুঝেছিলেন যে গুজরাতের সুলতান বাহাদুর শাহকে শক্তি বলে পরাজীত করা সহজ নয়।তখন রানী কর্ণবতী দিল্লীর মুঘল সম্রাট হুমায়ূনের কাছে সাহায্য প্রার্থনার্থে সম্রাট
কে রাখী উপহার পাঠান।এই উপহার সম্রাট কে মোহিত করে ও তিনি রানী কর্ণবতীর সঙ্গে স্নেহের
সম্পর্কে আবদ্ধ হন এবং রাজপুত দের সঙ্গে মিত্রতা করেন। সে দিনের ছোট্টো উপহারটি যুদ্ধের হিংস্রতা কে শিথিল করতে সক্ষম হয়েছিল।
১) মুসলমানী সাম্রাজ্য গ্রাসীত ভারতবর্ষে রাজপুত আর সুলতান দের যুদ্ধ চলাকালীন চিতরের
বিধবা রাণী কর্ণবতী বুঝেছিলেন যে গুজরাতের সুলতান বাহাদুর শাহকে শক্তি বলে পরাজীত করা সহজ নয়।তখন রানী কর্ণবতী দিল্লীর মুঘল সম্রাট হুমায়ূনের কাছে সাহায্য প্রার্থনার্থে সম্রাট
কে রাখী উপহার পাঠান।এই উপহার সম্রাট কে মোহিত করে ও তিনি রানী কর্ণবতীর সঙ্গে স্নেহের
সম্পর্কে আবদ্ধ হন এবং রাজপুত দের সঙ্গে মিত্রতা করেন। সে দিনের ছোট্টো উপহারটি যুদ্ধের হিংস্রতা কে শিথিল করতে সক্ষম হয়েছিল।
২) বাংলায় রাখী বন্ধন প্রবর্তণ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।আমাদের দেশ তখন বৃটিশ দের অধীনে শাসিত।১৯০৫ সালে ২০ জুলাই ভাইসরয় লর্ড কার্জন এর সিদ্ধান্তে ঘোষিত হয় যে বাংলা কে দুই
ভাগে ভাগ করা হবে।এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলার শক্তিকে খর্ব করা।ঠিক করা হয়েছিল যে হিন্দু ও
মুসলিমের প্রাধান্য অনুসারে সমগ্র বাংলাকে পূর্ব আরপশ্চিম বাংলায় বিভক্ত করা হবে।১৯০৫ সালে ১৬ অক্টোবরে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরী হয়।সমগ্র বাংলা এই বিভাগের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে।
শুরু হয় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন।এই বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন এর অন্যতম ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।তিনি বাংলার সব মানুষ কে আহবান জানান এর প্রতিবাদে সামিল হবার জন্য।এই দিনটিতে তিনি রাখী বন্ধন উৎসব পালন করেন বাঙ্গালীদের নিয়ে।রবীন্দ্রনা থ প্রবর্তিত রাখী হিন্দু সমাজে প্রচলিত অনুষ্ঠানের থেকে তাই কিছুটা ভিন্ন।
রাখীপুর্ণিমাবিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ভাবে পালিত হয়ঃ উড়িষ্যা তে গামহা পুর্ণিমা। মহারাষ্ট্র, গোয়া,
গুজ্ররাতে নারালি পুর্ণিমা। উত্তারাখান্দে জান্ধ্যাম পুর্ণিমা। মধ্যপ্রদেশ, ঝারখন্ড, ছত্রিশগড়ে কাজারি পুর্ণিমা। পশ্চিমবঙ্গে ঝুলন পুর্ণিমা।
গুজ্ররাতে নারালি পুর্ণিমা। উত্তারাখান্দে জান্ধ্যাম পুর্ণিমা। মধ্যপ্রদেশ, ঝারখন্ড, ছত্রিশগড়ে কাজারি পুর্ণিমা। পশ্চিমবঙ্গে ঝুলন পুর্ণিমা।
রাখী বন্ধনের পদ্ধতিঃ
কাঠের পিঁড়ি তে ভাই কে বসতে দেয়া হয়। পিঁড়ির চারপাশে আলপনা আঁকা হয়। এবার ভাই বোন দুইজনেই একে অপরের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করে। বোন ভাইএর কপালে তিলক দিয়ে দেয়। এবার ডান হাতের কব্জিতে রাখী বাঁধে। এরপর ঘি এর প্রদীপ দিয়ে ভাইয়ের সামনে আরতি করা হয়। ভাই, বোন কে উপহার দেয় এবং বোন তা শ্রদ্ধার সাথে গ্রহন করে। পরিশেষে বলা যা্য় রাখী বন্ধন উৎসব
একটি পারিবারিক মিলন বন্ধনের উপযুক্ত উদাহরণ । বর্তমানে আমাদের জীবনে রাখী বন্ধন উৎসব শুধুমাত্র বোন-ভাই এর মধ্যেই সীমিত নেই বন্ধু-বান্ধব এবং রাজনৈতিক জগতেও নিজেদের মধ্যে ভালোবাসার এবং মিলনের ঐক্য গড়ে তুলছে।
0 Comment to "রাখী বন্ধন BY Niranjan Sarkar"
Post a Comment